পটুয়াখালীতে জেলা জজের ড্রাইভার পরিচয়ে হয়রানি ও জোরপূর্বক জমি দখলের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে ভুক্তভোগী ও তার পরিবার।
১৭ ডিসেম্বর রোজ মঙ্গলবার বেলা ১২ টায় পটুয়াখালী জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ভূক্তভুগী আব্দুস সোবাহান। এ সময় তার পরিবারবর্গ উপস্থিত ছিলেন।সংবাদ সম্মেলনে আব্দুস সোবাহান বলেন, গত ৩০/০৬/২০১৮ ইং সনে সোনালী ব্যাংক পিএলসি, প্রিন্সিপাল অফিস, পটুয়াখালী থেকেঅফিসার (ক্যাশ) পদ মর্যাদায় অবসর গ্রহণ করি।
অবসর গ্রহণের টাকা দিয়ে গত ১১/১১/২০২০ ইং তারিখ জেলা ও থানা সদর সাব রেজিঃ অফিস পটুয়াখালীর অধীন হাল ২০নং তৌজির মালিক দখলদার বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে সহকারী কমিশনার ভূমি পটুয়াখালী, সাং পো: থানা ও জেলাঃপটুয়াখালী পৌরসভার অন্তর্গত জে,এল, নং ৩৮ মৌজা পটুয়াখালী, এস.এ. ৬৪২ খতিয়ান থেকে ৩২৬, ৪১৩, ২৬৫৬ ও ২৬৫৭ দাগে মোট ৫ শতাংশ জমি ক্রয় করি। ক্রয় মূল্য ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ) টাকা মাত্র। দলিল নং ৬৭৯৮ আপসমতে ৩২৬ দাগ দিয়ে ভোগদখল করার জন্য ২২/০২/২০২২ ইং তারিখে আমাকে বুঝিয়ে দেয়। ২৬/০২/২০২২ ইং তারিখে আমি ঐ জায়গায় গৃহ নির্মাণের জন্য গেলে উপরোক্ত বিবাদীগণ এবং আরো ৭/৮ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি আমাকে কাজে বাঁধা দেয়। ঐ সময় থানার আশ্রয় নিলে একজন এস.আই এবং ২ (দুই) জন কনস্টেবল তদন্তে আসেন। জলিল রাঢ়ী পটুয়াখালী জেলা জজ আদালতের স্পেশাল জজ সাহেবের ড্রাইভার পরিচয় দিয়ে পুলিশ বাহিনীদেরকে ধমক দেয় ৷
তারা জজ কোর্টের ড্রাইভারের তোপের মুখে পরে চলে যেতে বাধ্য হয়। বর্তমানে সে জেলা জজ সাহেবের নাম ভাঙ্গিয়ে আরও বেশী প্রভাব খাটিয়ে যাচ্ছে। স্বৈর সরকারের আমলে যে ভাবে প্রভাব খাটাতো এখনও সে সেভাবেই চালিয়ে যাচ্ছে। আমি বিফল ও অসহায় অবস্থায় চলে আসি। পরবর্তীতে আমি বাদী ১ নং বিবাদী মো: জলিল রাঢ়ীর আপোষের চেষ্টা করি। গত ৩০/০৫/২০২২ ইং তারিখে স্থানীয় কয়েকজন গন্যমান্য ব্যক্তি বর্গের মাধ্যমে সালিশ রোয়েদাদ শর্ত না মানিয়া আমার কাজে বাঁধা প্রদান করে এবং আমার কাছে ২০,০০,০০০/- (বিশ লক্ষ) টাকা চাঁদা দাবী করে। আমি উক্ত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানাই এবং আমার কাছে এত টাকা নাই বলে তাকে অবহিত করি। তাহাতে ১ নং বিবাদী জলিল রাড়ী আমাকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে এবং কোনদিন এই জমি ভোগদখল করতে দিবেনা বলিয়া হুমকি দেয় । তাহাতে আমি উপায়আস্ত না পাইয়া আমার জীবনের শেষ সম্বল বলিয়া তাহার হাতে পায়ে ধরিয়া ২,৫০,০০০/- (দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার) টাকা ওকে দিয়ে কাজ শুরু করি ৷ ৫৩ ফুট দৈর্ঘ্য ৩৯ ফুট প্রস্থ ৭ ফুট উঁচু দেয়াল তৈরি করি। একটি টিন সেট ঘর তৈরী করি তাতে আরও আমার দুইলক্ষ টাকা খরচ হয়। ভিতরে ঢোকার জন্য দরজায় লোহারগেট লাগালে পরে আমাকে আবার কাজে বাঁধা দেয়। এবং আরও ১০,০০,০০০/- (দশ লক্ষ) টাকা দাবী করে ।
তখন আমি ও আমার স্ত্রী স্থানীয়দের কোন সহযোগিতা না পেয়ে ওখান থেকে চলে আসি। পরবর্তীতে গত ০৯/০৬/২০২৩ ইং তারিখ থেকে ২১/০৭/২০২৩ ইং তারিখ পর্যন্ত আমি ও আমার স্ত্রী মক্কা মদীনা হজ্জ্বব্রত পালনের জন্য অবস্থান করি। ছেলেরা চাকুরীরত অবস্থায় থাকার সুযোগে বিবাদীরা আমার দেয়াল ভেঙ্গে মাটির সমান করে দেয়। ইটগুলো নিয়ে যায়, টিনের ঘরটি নিয়ে যায়। লোহার গেট, ৬ বস্তা সিমেন্ট এছাড়া আরও ২০০০ ইট সব কিছু নিয়ে যায়। গত ১৭/১১/২০২৪ ইং তারিখে সকাল আনুমানিক ৭ ঘটিকার সময় বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পারলাম যে বিবাদীরা আমার ক্রয়কৃত জায়গায় পাকা বাড়ী নির্মানের কাজ শুরু করার পায়তারায় লিপ্ত আছে।
আমি কালবিলম্ব না করে সেখানে উপস্থিত হয়ে নিশ্চিত হই বিবাদীরা বাড়ী নির্মাণ কাজ শুরু করেছে। আমি উপয়ান্তর না পেয়ে অফিসার ইনচার্জ পটুয়াখালী খানা বরাবরে একখানা অভিযোগ দায়ের করিলে ওসি সাহেব একজন এসআই ও চারজন পুলিশ কনষ্টবল পাঠায়। তখন কাজ বন্ধ করে পুলিশ চলে গেলে আবারও কাজ শুরু করে এবং পরের দিন আবার কাজ শুরু করিলে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা সেখানে গেলে আবার কাজ বন্ধ করে।পরে বড় চৌরাস্তায় স্থানীয় একজন সম্মানী ব্যক্তি জনাব শাহিন হাওলাদার তার অফিসে ৩ জন উকিলের সাহায্য নিয়ে শালিশের আয়োজন করেন। কাগজ পত্র দেখে সালিশেরা নিশ্চিত হয় যে, বিবাদী পক্ষের ৩২৬ দাগে জমি ভোগদখল করার কোন সুযোগ নাই কিন্তু বিবাদী পক্ষের জলিল রাড়ী তাহা মানে না।
জজের ড্রাইভার এর ক্ষমতা বলে সে জমি জোড় পূর্বক ভোগদখলের চেষ্টা চালায়। আমি যাদের কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছি সেই মালিকের আরও ২/৩ খন্ড জমি বিবাদীরা দখল করে রেখেছে। বড় চৌরাস্তার উত্তর পাশে অপসোনিন অফিসের উত্তর পাশে এবং পটুয়াখালী ব্রিজের ঢালে টোল ঘরের পশ্চিম পাশে অবস্থিত ৬৪২ খতিয়ানের, ৩২৬ নং দাগে জমির অবস্থা সরে জমিনে তদন্ত করা একান্ত প্রয়োজন বলে মনে করি। আমি যখনই আমার ক্রয়কৃত জমির কাছে যাই তখনই জলিল রাঢ়ী দলবল সহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমার দিকে ঝাপিয়ে পড়ে। বর্তমানে জজ কোর্ট বন্ধ থাকার কারনে বিবাদীরা লোকজন নিয়ে অন্যায়ভাবে গৃহনির্মানের কাজ চালাইতেছে। গত ১২/১২/২০২৪ ইং তারিখে আনুমানিক ১-৩০ ঘটিকার সময় জমির দাতা মালিকরা সেখানে গেলে তাদেরকে বগি দাও এবং লঠি সোটা দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। মোঃ জলিল রাড়ী যেভাবে আমাদের উপর হামলা করে তাতে আমাদের জীবন নাশের আশংকা আছে। আমাকে যখনই দেখে অকথ্য ভাষায় গালি গালাচ সহ খুন জখমের হুমকি প্রদর্শন করে। তারা থানা বা অন্য কোন সালিশ ব্যবস্থা মানেনা । তাই বর্তমান প্রধান উপদেষ্টার নিকট আকুল আবেদন পটুয়াখালী জেলা জজ আদালতের স্পেশাল জজ সাহেবের ড্রাইভার পরিচয় দেয়া জলিল রাড়ীর হাত থেকে যেন মুক্ত করেন। অন্যদিকে জলিল রাঢ়ীর মুঠোফোনে জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে পৈত্রিক জমি দাবি করে জজ সাহেবের আসছে বলে ফোন কেটে দেন।
এদিকে অভিযুক্ত জলিল রাঢ়ীর মুঠোফোনে জমি দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে পৈত্রিক জমি দাবি করেন, শুধু তাই নয় এ সময় জলিল রারি আরো বলেন যে, যে ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছে তিনি তো আমাদের কাজ থেকে জমি ক্রয় করেননি, তিনি যার কাছ থেকে জমি ক্রয় করেছেন তাদের সাথে কথা বলবেন, কেন আমাকে বারবার হয়রানি করা হচ্ছে এমনটাই বলেন অভিযুক্ত জলিল রাড়ি। তাছাড়াও উক্ত বিষয় নিয়ে আদালতে মামলা চলমান রয়েছে অতএব উক্ত বিষয় নিয়ে বেশি কিছু বলার নেই আমার, আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এমনটাই বলেন জলিল রাড়ি।